মুভি রিভিউ : মুক্তিযোদ্ধভিত্তিক ছবি "গেরিলা "

সিনেমা হল থেকে দেখে আসলাম বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধের পটভুমিতে তৈরি করা অসাধারন একটা সিনেমা "গেরিলা " ভাবলাম একটা রিভিউ লিখি । রিভিউ লেখাটা কিন্তু খুব একটা কঠিন আমার কাছে কখনোই মনে হয়নি এর আগেও অনেক সিনেমার রিভিউ ব্লগে লিখেছি তবে সেগুলো ছিলো হলিউডি মুভি, নিজের দেশের প্রতি আলাদা মততাবোধ কাজ করার কারণে বাংলা সিনেমার রিভিউ লেখাটা একটু হলেও দায়িত্ব নিয়ে লিখতে হয় আর নিজের দেশের সিনেমা যদি হয়  দেশের মুক্তিযোদ্ধ নিয়ে তখন মনে হয় কিছুটা কঠিন বৈকি ।কঠিন কেন জানেন ? কারণ আমার রিভিউটা পড়ে যদি একজন বাংলাদেশীও হলে গিয়ে গেরিলা না দেখে সেটা কিন্তু আমার ব্যর্থতা । সেই কঠিন কাজটাই আজকে করতে হবে ।

গেরিলা সিনেমার মুল কাহিনী গড়ে উঠেছে বিলকিস(জয়া আহসান) কে ঘিরে । বিলকিসের অসামান্য অবদানকেই এখানে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে খুব সুন্দর ভাবে । বিলকিসের স্বামী হাসান (ফেরদৌস) ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ নিখোজ হয়ে যায় । বিলকিস সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেনা কিন্তু সে মুক্তিযোদ্ধাদের নানাভাবে সাহায্য সহযোগীতা করে । বিলকিসের সাথে সাহায্য করে আরেকজন মিসেস খান (শম্পা রেজা) কিন্তু ঘটনাক্রমে বিলকিসের পেতে রাখা বোমায় পাকিস্তানি আর্মিদের সাথে শহীদ হন মিসেস খান ।

সময়ের আবর্তে ১৯৭১ এর আগষ্ট মাসের শেষ দিকে একটি বড় অপারেশনের পর পাকিস্তানি আর্মিরা বিলকিসের ব্যাপারে সব খবর জেনে যায় তখন বাধ্য হয়ে বিলকিসকে ঢাকা ছেড়ে পালাতে হয়। বিলকিস ফিরে আসে তার গ্রামের বাড়িতে । গ্রামের পথে,ডোবা নালায় বিকৃত লাশ আর মানুষের প্রতি রাজাকার আর পাকিস্তানিদের অত্যাচার দেখে শিউরে উঠে বিলকিস । তারপর কি হয় তা লিখলাম না আর তাহলে হলে গিয়ে মজা পাবেন না সব জানি সব জানি টাইপের ভাব চলে আসবে আপনার ভিতরে ।


গেরিলা সিনেমার প্রথম যে দিকটা ভালো লেগেছে তা হলো গতানুগতিক মুক্তিযোদ্ধ টাইপের সিনেমা থেকে একটু আলাদা গেরিলাতে বিলকিসের সংগ্রামটাকেই হাইলাইট করা হয়েছে মানে পুরো মুক্তিযোদ্ধ থেকে মুক্তিযোদ্ধের একটা চরিত্রকেই হাইলাইট করা হয়েছে বেশি। খেয়াল করে দেখবেন গতানুগতিক মুক্তিযোদ্ধের সিনেমাগুলোতে চেষ্টা করা হয় যে পুরা নয় মাসের যুদ্ধটাকেই তুলে ধরতে,সেই চেষ্টা এখানে করা হয়নি
একটা ভালো সিনেমা তৈরি করতে যতটুকু সম্ভব চেষ্টা করা, সেই চেষ্টাটা গেরিলা টিম করেছে ,গেরিলার ভিতরে প্রতিটা চরিত্রই ভালো অভিনয় করার চেষ্টা করেছে কোন চরিত্রই দেখে মনে হয়নি এরা অভিনয় করার চেষ্টা করছে বরং সবাইকেই সাবলীল অভিনয় করতে দেখা গেছে যে জিনিসটা সচারচর বাংলা সিনেমাতে চোখে পড়েনা ।বিভিন্ন দেয়াল লিখন এবং রাজাকারের/মুক্তিযোদ্ধার চরিত্রে যারা অভিনয় করেছে  তাদের অভিনয় দেখার মতো ছিলো । জয়া আহসানের কথা আর কি বলবো তার  অভিনয় ছিলো অসাধারণ । জয়া রকসসসসসসসসসসসসস

ভালো একটা সিনেমা তৈরিতে পরিচালকের  চেষ্টা চোখে পড়ার মতো ছিলো যুদ্ধের দৃশ্যগুলো এবং পাকিস্তানি বাহিনীর ক্যাম্পগুলো বেশ সুন্দরভাবেই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে গেরিলাতে ।সোজা হিসেবে বললে নিট এন্ড ক্লিন যাকে বলে আরকি ।

আশা করি হলে গিয়ে সিনেমাটা দেখবেন

1 comments:

Tawhidul Islam said...

বাংলা ছবির নাম শুনলেইতো মাথা ঘুড়ে। দেখি সময় করে হলে গিয়ে দেখে ফেলব। রিভিউ দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।

Post a Comment

লেখাটি শেয়ার করুন