ঝরনার নাম আমিয়াখুম (ভ্রমনব্লগ ও গাইডলাইন ।)

২০১৩ সালের নভেম্বরের শেষ দিকে ডিসেম্বরের প্রথম দিক মিলিয়ে গিয়েছিলাম বান্দরবন [এখনো বান্দর দেখিনাই আফসুস] ২০১০ এর দিকে একবার বান্দরবন যাওয়া হয়েছিলো সেই ভ্রমণের বিস্তারিত পাবেন এই লিংকে 

এবারের ট্যুরটা ছিলো মেগা ট্যুর আমাদের প্ল্যান ছিলো বগালেক দিয়ে প্রবেশ করবো তারপর কেওক্রাডাং,সাকাহাফং,আমিয়াখুম,নাফাখুম ,বড়পাথুরিয়া দেখে থানচি দিয়ে বের হবো সোজা হিসেবে রুমা দিয়ে ইন হবো আর থানচি দিয়ে আউট হবো । ইনশাল্লাহ আল্লাহর রহমতে ছয়দিনে সবগুলো লোকেশন দেখে আমরা ফিরে আসতে পেরেছি ।

এক পোস্টে সবগুলো লিখা সম্ভব না তাই আলাদা আলাদা লিখবো আজকে লিখবো আমার দেখা  সবচেয়ে স্টাইলিশ আর সুন্দর ঝরনা আমিয়াখুম নিয়ে..........

আমিয়াখুম ঝরনা যাওয়ার পথেই পুরো বান্দরবনের একটা প্রতিচ্ছবি পাবেন বড় পাথুরিয়ার মত  বড় বড় পাথর,অপূর্ব প্রাকৃতিক দৃশ্য ,ছোট ছোট ঝরনা সবই পাবেন এখানে ।


কিভাবে যাবেন : আমাদের রাস্তাটা ছিলো অন্য ভাবে রুমা বাজার দিয়ে প্রবেশ করে প্রায় চারদিন হাটার পর এসে পৌছেছি সাজিয়াপাড়া সেখান থেকে আমিয়াখুম দেখে আবার সাজিয়াপাড়া ফিরে এসেছি । তবে বর্তমানে খুব সহজে আপনি আমিয়াখুম পৌছাতে পারেন সেজন্য আমাদের গল্পটা পাশ কাটিয়ে বর্তমানে কিভাবে সহজে যাবেন সে গল্পটা দিচ্ছি



দেশের যেকোন প্রান্ত হতেই রওয়ানা দিয়ে বান্দরবন আসুন তারপর বান্দরবন থানচি যাবার বাসস্ট্যান্ডে চলে আসুন সেখান থেকে বাসে করে থানচি চলে আসুন,থানচি আসতে প্রায় ৫/৬ ঘন্টার মতো লাগে । তবে আপনি চাইলে চাঁন্দের গাড়ী দিয়েও আড়াই তিন ঘন্টায় চলে আসতে পারবেন থানচি ।

থানচি নেমে প্রধান কাজ হলো একজন গাইড ঠিক করা । এবার থানচি থেকে নৌকা নিয়ে চলে আসুন পদ্মমুখ নৌকা প্রতিটি এক হাজার টাকা করে নিবে  ।

পদ্মমুখ নামার পর আপনার হাটা /ট্রেকিং শুরু হবে আপনার গন্তব্য হবে থুইসাপাড়া .পদ্মমুখ থেকে থুইসুাপাড়া পৌছাতে আপনার ৫/৬ ঘন্টা লেগে যাবে ।

থুইসা পাড়া এসে আপনাকে রাত এখানেই কাটাতে হবে ,আদিবাসী/পাহাড়ীদের বাড়ীতে থাকবেন গাইডই সব ব্যবস্হা করে দিবে

পরের দিন সকালে উঠে আমিয়াখুমের উদ্দেশ্য আবার ট্রেকিং শুরু ....প্রায় দুই ঘন্টার মধ্যে পৌছে যাবেন আপনার প্রিয় গন্তব্যে এখানে আমিয়াখুম ভেলাখুম সাতভাইখুম সবই একসাথে দেখতে পারবেন ।

মন ভরে আমিয়াখুম দেখে আবার থুইসাপাড়া ফেরত আসবেন রাতটা থুইসা পাড়া কাটিয়ে দিতে পারেন ।

পরের দিন ভোরে উঠে আবার হাটা শুরু এক দেড় ঘন্টা হাটার পর পাবেন নাফাখুম জলপ্রপাত এটা দেখে আবার দুই ঘন্টা হেটে পৌছাবেন রেমাক্রি । এখান থেকে নৌকা পাবেন সেগুলো নিয়ে থানচি চলে আসবেন দুই থেকে আড়াই ঘন্টা লাগবে  থানচি থেকে বান্দরবন এবং রাতের বাসে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা ।

এক্ষেত্রে অনেকে থুইসাপাড়া থেকে আমিয়াখুম দেখে সরাসরি রেমাক্রি চলে এসে রাতটা রেমাক্রি কাটায় তারপর দিন ভোরে ভোরে থানচির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে যায় ।

এবার নিশ্চয় খরচের একটা ব্যাপার এসে যায় সেটাও সংক্ষেপে বলে দিচ্ছি

# গাইড এ পুরো রুটটার জন্য ৫/৬ হাজার টাকার মতো নিবে । দাম দর করে নিবেন ।

# থানচি থেকে পদ্মমুখ প্রতি নৌকা এক হাজার টাকা এবং রেমাক্রি থেকে থানচি প্রতি নৌকা দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত নিতে পারে ।

# বান্দরবন থেকে থানচি বাসে ১৫০ করে প্রতিজন আর চাঁন্দের গাড়ী সাড়ে তিন থেকে চার হাজার টাকা নিবে ।

# খাবার ভাত ডাল ভর্তা মুরগী এমন আইটেম খেতে পারবেন প্রতিবেলা একশো থেকে দেড়শো টাকা নিবে আর থাকাও একশো থেকে দেড়শো টাকার মধ্যে প্রতি রাত ।




বাংলা রচনার মতো করে কিভাবে যাবেন লিখে দিয়েছি এবার চলুন ছবিতে ঘুরে আসি অসাধারণ "আমিয়াখুম ঝরনা "

.
আমিয়াখুমের পথে ভাইরে কেন জানি এই পাহাড়টা উঠতে খবর হয়ে গেছিলো :(

পাহাড় থেকে নেমে এবার এমন ঝিরি পথে হাটা শুরু

নিজের চোখে যখন এই জায়গাটা দেখবেন নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে হবে যে আপনি এখানে আসতে পেরেছেন  এক কথায় অসাধারণ

স্রোত ছিলো প্রচন্ড সাহস করে মারলাম এক লাফ 

অসাধারণ 

এমন সব দুগর্ম রাস্তা দিয়ে হাটতে হবে আপনাকে 

পানি প্রচন্ড ঠান্ডা :( আমদের গাইড একটা রশি বেধে দিয়েছে পাথরের সাথে সেই রশি ধরে ধরে আস্তে আস্তে পানিতে নেমে গেলাম তারপর সাতার কেটে এই জায়াগাটা পার হতে হলো 

কিছুক্ষণ সাতার কাটার পর এই বাশের ভেলাটা পেলাম তারপর ভেলাতে চড়ে রওয়ানা হলাম 

অবশেষে আমিয়াখুমের ঝরনার সেক্সি হট মুখ দেখলাম 

অসাধারন এক ঝরনা আমিয়াখুম যখন আপনি ঝরনার সামনে দাড়াবেন তখনকার অনুভুতিটা সারাজীবন  মনে থাকবে

আমিয়াখুম ঝরনা 

স্টাইলিশ আমিয়াখূম 

আমিয়াখুম ঝরনার একটু সামনে গেলেই এমন বড় বড় সব পাথর দেখতে পাবেন ইচ্ছা করলে এক পাথর থেকে অন্য পাথরে লাফ দিয়ে যেতে পারবেন তবে হাত পা ভাঙ্গলে কিন্তু আমি দায়ী নই 


অবশেষে ব্লগার বিল্লাহ মামুনের একটি ছবি দিয়ে লেখা শেষ করলাম
মোটামুটি সবই লিখে দিয়েছি সময় করে চলে যান আমিয়াখুম ঝরনা দেখতে কোন হেল্প লাগলে কমেন্টস করুন অথবা আমাকে ফেইসবুকে নক করতে পারেন  মুক্তকন্ঠে সাহায্য করবো:) ভালো থাকুন




[অবশেষে ছোট্র একটা অনুরোধ, যেখানেই ঘুরতে যান সেখানের পরিবেশের দিকে নজর রাখবেন শুধু আমরা দেখলেই হবেনা ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য এই জায়গাগুলো আমাদেরকেই রক্ষা করতে হবে ছোট্র একটা উদাহরণ দেই মনে করুন আপনি ছোট্র একটা বিস্কিটের প্যাকেট এবং পানির বোতল নিয়ে আমিয়াখুম গেলেন এখন যদি প্রতিবছর সেখানে ১০০০ জন পর্যটক যায় তাহলে দেখা গেলো এক হাজার বিষ্কিটের প্যাকেট এবং পানির বোতল এবার বুঝেন অবস্হা আমিয়াখুম ডাস্টবিন হতে বেশীদিন লাগবেনা সুতরাং মনে রাখবেন আপনার যেখানে সেখানে ফেলে দেওয়া একটা সিংগেল প্যাকেটও পরিবেশের বড় ক্ষতি করে দিতে পারে ।]

8 comments:

shohan said...

beautiful . :D

shohan said...

beautiful :D

bayezid al aziz said...

ভাই অশেষ ধন্যবাদ।বিশেষ করে শেষের অনুরোধটার জন্য।আমি নাফাখুম যেয়ে দেখলাম কিছু পোলাপান সেখানে বিয়ার খেয়ে ক্যান ফেলে আসলো :(

Anonymous said...

Thank you sooooooooooo much to shear such a beauty of Bangladesh. Our beloved country.

Anonymous said...

apnar vromon experience amader shathe share korar jonno dhonnobad.apnar dewa info amar bandarban tour er jonno onek helpfull hobe.

Unknown said...

Best of Luck for your Site.............


Anonymous said...

oasadharon.onk dhonnobad share korar jonno.bhai 3 din a ki ai tour ta complete hbe??

Billah Mamun said...

টাফ ট্রেকার হলে তিনদিনে সম্ভব হতে পারে তবে চারদিন হলে আরাম করে যেতে পারবেন ।

Post a Comment

লেখাটি শেয়ার করুন